Dhaka Metrorail and Purbachol Expressway

Dhaka Metrorail and Purbachol Expressway 

Worst Example of Sustainable Development 

 গত দশকে পাঠ্যপুস্তকে, খবরের কাগজে বা বিভিন্ন নিউজে এম.ডি.জি, এস.ডি.জি ( মিলেনিয়াম ডেভেলোপমেন্ট গোল, সাস্টেইনেভেল ডেভেলোপমেন্ট গোল) এই বিষয়  দুটিকে বেশ ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে আমাদের দেশে । দেশের  সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আমাদের মতো যারা ছাত্র-ছাত্রী আছি তাদের মধ্যে এ বিষয়টাকে  উপলব্ধি করানো ছিল এর একটি বড় উদ্দেশ্য। চাকুরী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায়ও  এ বিষয়টা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন করা হয়েছে।  দেশ হিসেবে আমরা  সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রা অর্জন করে টেকসই উন্নয়ন এর দিকে নজর দিচ্ছি, সরকার এবং আমলাদের বিভিন্ন পর্যায়ে থেকে এ বিষয়টিকে আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেয়া হয়েছে। 


                                   ২০২২ সালের ডিসেম্বরে  বাংলাদেশ প্রথম  মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-৬ এর কিছু অংশ বিশেষ  উদ্বোধন করে। ঢাকার যানজট   নিরসনের লক্ষ্য নিয়ে ঢাকার অভ্যন্তরে  ছয়টি রুটে  ছয়টি মেট্রোরেল চালুর  পরিকল্পনা আছে সরকারের।  এরমধ্যে এমআরটি লাইন -১ এর কাজ জানুয়ারি ২০২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হয় ।  বাহান্ন হাজার কোটি টাকার বেশি  খরচ হবে ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ  এই  মেট্রোরেল প্রকল্পে।   এর প্রায় ২০ কিলোমিটার হবে পাতাল এবং ১১ কিলোমিটার হবে  উড়াল পথে।


MRT-01 and MRT-06 



     পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে, সাধারণ মানুষের কাছে যেটা  ৩০০ ফিট রাস্তা নামে বেশি পরিচিত, ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সরকারের নেয়া  উচ্চবিলাসী কিছু প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম । ১২.৫  কিলোমিটার দীর্ঘ  ১২-১৪ লেনের এ সড়কে আট লেন থাকছে   দ্রুতগতির যানবাহনের জন্য বাকি ৪/৬  লেন সার্ভিস লেন হিসেবে লোকাল   ট্রাফিকের জন্য। এ সড়কটি পরে ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে এর সাথে সংযুক্ত হচ্ছে যা  চট্টগ্রাম ও সিলেট মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত থাকবে। সড়কটি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার পাশাপাশি পূর্বাচলের সাথে যোগাযোগকে অনেক সহজ করে দিবে,  এতে করে সার্বিকভাবে ঢাকার আয়তন যেমন বাড়বে , তেমনি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেটের  যোগাযোগ সহ্জ হবে। প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বানানো এই সড়কটির কাজ প্রায় একদম শেষ পর্যায়ে  ( মার্চ ২০২৩ ) । 


MRT-01 দুটি অংশে বিভক্ত, কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিমি পাতাল রেল এবং নতুন-বাজার থেকে  পূর্বাচলে এর  ডিপো পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার উড়াল বা এলিভেটেড রেল। এই এলিভেটেড অংশ এর প্রায় পুরোটাই হবে সদ্য নির্মিত পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের মাঝখানের আইল্যন্ড এর উপর দিয়ে। এর ফলে যা দেখা যাচ্ছে যে উদ্বোধন এর অপেক্ষায় থাকা পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের চালুর কিছু সময় এর মধ্যেই আবার এর উপর নতুন নির্মাণ যোগ্য শুরু হবে। ফলে সদ্য নির্মিত পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের বেশ কিছু অংশের ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া এখন অনিবার্য হয়ে দাড়িয়েছে। এর আগে MRT-6 এর কাজের জন্য রাস্তার মাঝে ৯-১১ মিটার যায়গা নিয়ে ব্যরিয়ার দিয়ে রেখেছিল MRT-06 এর ঠিকাদার, সে হিসেবে পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের মাঝের আইল্যান্ডসহ আপ ও ডাউন এর মোট দুটি লেনের আংশিক বা পুরোটাই বন্ধ রেখে MRT-01 এর  নির্মাণ কাজ করা হবে। এতে করে সদ্য নির্মিত রাস্তার সুফল যেমন মানুষ পাবে না আবার নতুন ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা নির্মাণ করতে সরকারকে আরো অর্থ ব্যয় করতে হবে। এ নিয়ে বর্তমান সময়ে অনেক কথা উঠায় MRT-01 প্রকল্পের সাথের সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলছেন যে রাস্তার ক্ষতি না করে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হবে এবং আইল্যান্ডের মধ্যেই পিলার স্থাপন করা হবে। তবে পিলারের জন্য আইল্যন্ড এর ৪ মিটার যায়গা যথেষ্ট হলেও নির্মাণ কাজের সময় রাস্তার দুটি লেনের যায়গা ব্যবহার না করে উপায় নেই.। পাইলিং হ্যামার, RMC plant, rock truck, excavator, loader  ছারাও আরো ভারি যন্ত্রপাতি ব্যবহার হবে নির্মানের সময়। এসব হেভি ডিউটি যন্ত্রপাতির ব্যবহার, মুভমেন্ট, পার্কিং এর সময় উভয় পাশের এক এক করে মোট দুই লেন রাস্তা occupied থাকবে এবং এর ব্যপক ক্ষতি হবে। 


বাংলাদেশে এরকম ব্যবস্থাপনা ও  সমন্বয়ের অভাব নতুন নয়, তবে এর মতো মাত্রাহীন এর আগে কখনো হয়েছে বলে মনে হয় না। তবে   পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের কিছু অংশ ১৪ লেন ও কিছু ১২ লেনের হওয়ায় অন্তত ১০ লেন মানুষ ব্যবহার করতে পারবে। ফলে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টে খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা না। তবে নির্মাণ কাজ চলায় কাঙ্ক্ষিত গতিতে এ রাস্তায় গাড়ি এখনি চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তার জন্য আরো ৬-৮ বছর অপেক্ষা করতে হবে ঢাকা বাসিকে।


এতো বড় পরিসরের কাজ যেখানে বড় বড় সংস্থা ও সরকারের বড়  বড় আমলারা জড়িত থাকার পরেও   এত বড়   সমন্বয় হীনতা এবং অব্যবস্থাপনা থাকাটা স্পষ্ট বার্তা দেয় এস.ডি.জি বা সাস্টেইনেভেল ডেভেলোপমেন্ট গোল অর্জনে আমাদের অবস্থান কতোটা নাজুক। খাতা কলমের লক্ষ অর্জন করলেও বাস্তবে আমরা খুব বেশি অগ্রসর হতে পারি নি।





Kuril Highway and Purbachol Expressway

Post a Comment

0 Comments